এই বই প্রকৃতই এক ‘জীবনী’—ক্যানসারের জীবনী। এখানে অপরাজেয় এই ব্যাধির ‘মন’ উদঘাটনের চেষ্টা করা হয়েছে, চেষ্টা করা হয়েছে তার ব্যক্তিত্বকে বোঝার, তার আচার-আচরণ সম্পর্কে যাবতীয় রহস্য উন্মোচন করার। আনুমানিক ৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে পারস্যের রানি অ্যাটোসার স্তন টিউমার ছেদন করেছিল তাঁর গ্রিক ক্রীতদাস। সেখান থেকে শুরু করে আজকের জিনতত্ত্ব। এই দীর্ঘ যাত্রাপথের গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলকগুলি লেখক সিদ্ধার্থ মুখার্জি একের পর এক বর্ণনা করেছেন। কোষবিজ্ঞানীর মতো তাঁর নির্ভুল সূক্ষ্মতা, ঐতিহাসিকের মতো পরিপ্রেক্ষিত জ্ঞান, জীবনীকারের মতো আবেগ-উদ্দীপনা। এক অর্থে এটি এক ফৌজি ইতিহাস- যেখানে প্রতিপক্ষের কোনও নির্দিষ্ট রূপ নেই, কাল নেই, সে চারিদিকে পরিব্যাপ্ত। এর বিরুদ্ধে প্রজন্মের পর প্রজন্ম জুড়ে চলেছে নারী পুরুষের দুঃসাহস, কল্পনাশক্তি, উদ্ভাবনী ক্ষমতা আর আশাবাদের এক অনিঃশেষ প্রকাশ। তার নির্যাস তুলে আনতে গিয়ে এই গ্রন্থ নিয়ে যায় অনেক গভীরে- শুধু বিজ্ঞান আর চিকিৎসাশাস্ত্রের গভীরে নয়, সংস্কৃতি ইতিহাস-সাহিত্য-রাজনীতির গভীরেও- ক্যানসারের অতীতে, এবং ভবিষ্যতে। এক বৃহৎ ক্যানভাসে ধরা পড়েছে এই রাজব্যাধির ইতিবৃত্ত। ২০১১ সালে পুলিৎজার পুরস্কারে ভূষিত এই বই।