সুতোকাটা ঘুড়িদের মধ্যে একটা ছিল বৃটিশ বুড়ো। আড়ালে আবডালে নয়, অন্যান্য সুতোকাটা ঘুড়ি তাকে প্রকাশ্যেই ‘বৃটিশ বুড়ো’ বলে ডাকে। তাতে বিশেষ আপত্তিও নেই তার। সেদিন সুতোকাটা ঘুড়িদের সমাবেশে সে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়-মৃত্যুকে যারা ভয় করে, একবার দুবার নয় তাদের মরতে হয় বারবার। তবে মানবজনম ঘটে একবারই। তারপর আসে কুকুর-বেড়ালের মতো মানবেতর জনম। আবার মৃত্যু। আবার জন্ম। আর আমরা তো কখনো মৃত্যুকে ভয় করিনি, সাহসের সঙ্গে আলিঙ্গন করেছি। আমরা তাই বেঁচে গেছি। এই যে সুতোকাটা ঘুড়ি হয়ে দিব্যি আছি। আমাদের আবার মৃত্যু কিসের!
জীবন-লাটাইয়ের সবটুকু সুতো পূর্ণ ব্যবহার করতে পারেনি যারা, অসময়ে জোর করে সুতো ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে যাদের, অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর তারাই হয়েছে সুতোকাটা ঘুড়ি। ঘুড়ি না হয়ে প্রজাপতি হয়েছে প্রীতিলতা, দোয়েল হয়েছে ইলা মিত্র। আর চিরসবুজ বঙ্গবন্ধুও সুতোকাটা ঘুড়ি না হয়ে, হয়েছেন ঘাসফুল।
সুস্থ স্বাভাবিক জীবনের সুতো অসময়ে হঠাৎ কেটে দেওয়ার চক্রান্তে লিপ্ত মানুষেরা মৃত্যুর পরে হয়ে যায় ভূত। নানান জাতের ভূত। সেই ভূতের বিরুদ্ধে সুতোকাটা ঘুড়িদের নতুন লড়াইয়ের আয়োজন নিয়েই রফিকুর রশীদের এই কিশোর উপন্যাস।