লােনাজলে বসবাস’ ধ্রুপদী ঔপন্যাসিক ফয়েজ তৌহিদুল ইসলামের সর্বসাম্প্রতিক উপন্যাস। স্বপ্ন ও বাস্তবতার দ্বন্দ্বের সমীকরণ কে কখন মেলাতে পেরেছে? লেখকও পারেন নি। তার এই ব্যর্থতা সমগ্র মানবতার ব্যর্থতা হিসেবে বিধৃত হয়েছে এই উপন্যাসের পাতায় পাতায়। করুণ পদ্যময় গদ্যে লেখা উপন্যাসটি আনন্দ বেদনার মানব জীবনের এক অনবদ্য দলিল। সজীব ও রুবি পরস্পরের প্রেমে আকুল। তুমুল ভাসিয়ে নেওয়া সেই প্রেম দুজন আহৃদয় আশ্লষে ধারণ করতে চায়—একজন সাধনার বলে অন্যজন একান্ত মানবিক দুর্বলতায়। চর্যাগীতিকার আর মধ্যযুগের মহাকবিদের মতাে পরস্পরের সাধনসঙ্গী হয় তারা। ভ্রমণ করে হারিয়ে যাওয়া সেই সাধনচক্রের গােপন আস্তানায়। সাধনার পূর্ণতায় যখন পরস্পরের প্রেম অমর হয়ে ওঠে, তখনই ব্যক্তি সজীব কথা বলতে চায়। সাধনার মাধ্যমে পাওয়া অবিমিশ্র আনন্দময় প্রেমের বিপরীতে সুখ-দুঃখআনন্দ-বেদনায় ভেজা একান্তই মানবিক প্রেমের জন্য হাহাকার করে ওঠে সে। কিন্তু সে জীবনে যে সুখের চেয়ে দুঃখই বেশি তা বুঝতে তার দেরি হয়ে যায়, বড় বেশি দেরি হয়ে যায়। কিন্তু এটাই তাে মানুষের জীবন। চোখের লােনাজলে ভেজা দুঃখের জীবন। সেখানে কখনােবা প্রেম আসে বটে, কিন্তু বিরহের বসবাস আজীবন। ব্যক্তিগত দুঃখী জীবনের বিপরীতে লেখক সজীব তার গল্পের মিলনাত্মক রূপ দিলে আবহ আরও করুণ হয়ে ওঠে।