ইসলামী সম্মেলন সংস্থা (বর্তমান ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা) মুসলিম বিশ্বের একমাত্র আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংগঠন। জাতিসংঘ এবং এর অঙ্গসংগঠনগুলো নিয়ে যে আন্তর্জাতিক অবকাঠামো তার বাইরে ওআইসি হচ্ছে সবচেয়ে বড় আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংস্থা। সৌদি আরবের জেদ্দা শহরে এ সংস্থার সদর দফতর। প্রায় ৪৪ বছর আগে ফিলিস্তিনসহ মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য সমস্যা মোকাবেলার লক্ষ্য নিয়ে এ সংস্থার জন্ম হয়। পরবর্তীতে সংস্থাটি অর্থনৈতিক উন্নয়ন, শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সংঘর্ষ নিরসন, ইসলামাতঙ্ক মোকাবেলা ইত্যাদি ক্ষেত্রেও তার কর্মপরিধির বিস্তার ঘটায়। এই বইতে ৫৭টি সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত এই সংস্থাটির অর্জন, সাফল্য ও ব্যর্থতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আর এই আলোচনার মাধ্যমেই ইসলামী সমাজব্যবস্থার উন্নয়নে আধুনিকায়নের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।
২০০৫ সালে সংস্থাটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে তুরস্কের একমেলেদ্দিন ইহ্সানোগ্লু সংস্থাটির মহাসচিব নির্বাচিত হন। সেই থেকে শুরু করে ইহ্সানোগ্লু মুসলিম বিশ্বের জাতিগত ও গোষ্ঠীগত সংঘর্ষ, অর্থনৈতিক অনগ্রসরতা, অশিক্ষা ও দারিদ্রোর মত জটিল সব সমস্যা মোকাবেলায় অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলছেন। এই বইয়ে ইসলামাতঙ্কের বিস্তার এবং এর প্রেক্ষিতে মুসলিম বিশ্ব ও পশ্চাত্যের পারস্পরিক সম্পর্কের টানাপড়েন নিয়ে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে আলোচনা করেছেন। ওআইসি ইসলামাতঙ্কেকে একধরণের বর্ণবাদ বা জাতিগত বিদ্বেষ হিসেবে বিবেচনা করে। এ প্রেক্ষিতে ইহ্সানোগলু ধ্বংসাত্মক চরমপন্থিদের মোকাবেলায় কেন আর্ন্তজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর একযোগে কাজ করা উচিত-- সে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন। তার মতে মুসলিম সমাজের উন্নয়নের অন্যতম প্রধান শর্ত হচ্ছে মুসলিম সমাজব্যবস্থায় বাকস্বাধীনতা, মুক্তচিন্তা, সমঅধিকার ও প্রতিনিধিত্বশীল সরকার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং এক্ষেত্রে মুসলিম বিশ্বের আধুনিকায়নের লক্ষ্যে ওআইসি’র পুনগঠন ও সংস্কার একটি অতি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। মুসলিম বিশ্বের একজন অন্যতম সদস্যের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বর্ণিত নব্য শতকে মুসলিম বিশ্ব বইটি পরিবর্তনের এক নতুন যুগের আহ্বায়ক হিসেবে বিবেচিত হতে পারে