দর্পণ, তবে সাক্ষাৎ প্রতিবিম্ব নয়। নখদর্পণে যেমন যা অনুপস্থিত তার ছবি, এ অনেকটা তেমনই। চিঠির পৃষ্ঠপটে ফুটে-ওঠা হারিয়ে যাওয়া সময়ের ও ছাড়িয়ে-আসা জীবনের, স্মৃতির মধ্যে মিশে-থাকা স্মৃতির এক সবাক চলচ্চিত্র। অনেক আগের কিছু চিঠি জমে ছিল বাড়িতে। বলা ভালো, জমিয়ে রেখেছিলেন। ঠাঁই বদলেছে, কিন্তু ফেলি-ফেলি করেও ফেলা হয়নি চিঠির ডাঁই। আত্মীয়, বান্ধব, অখ্যাত, অল্পখ্যাত, বিখ্যাত নানান জনের লেখা। কখনও গৃহকর্তাকে, কখনও গৃহকর্ত্রীকে। এমন-কী, স্ত্রীর উদ্দেশে লেখা তাঁর নিজের লেখা চিঠিও। আর, এইসব চিঠির সূত্র ধরেই এই অন্য স্বাদের বই। অনন্য স্বাদেরও। এ শুধুই পুরনো চিঠির ঝাঁপি খুলে ধরা নয়। চিঠির মধ্যে ছড়ানো মন-কেমন-করা একেকটা পুরনো দিনের, চিঠির লতায়-পাতায় জড়ানো একেকটা আশ্চর্য স্মৃতির পুনরুদ্ধার। কথার পিঠে কথা, ছবির পরতে-পরতে ছবি। ইতিহাসের হাত ধরে চলা নয়, তবু এ-যুগের প্রধান এক কবির অন্তৰ্জীবন আর বহির্জীবনের টুকরো-টুকরো ইতিহাস অনায়াসে প্রতিফলিত এই চিঠির দর্পণে।