জনপ্রিয় সাহিত্যিক হিসাবে হুমায়ূন আহমেদ সম্ভবত পুরো বাংলা সাহিত্যেই অতুলনীয়। আরামদায়ক গদ্য ও শৈলী, সামগ্রিক প্রকাশক্ষমতা, লেখালেখির বৈচিত্র্য এবং পাঠকপ্রিয়তা সে সাক্ষ্যই বহন করছে। কথাসাহিত্যিক হিসাবে অন্তত দুটি ধারায় তিনি বেশ উঁচুমাপের সাফল্য দেখিয়েছেন—ছোটগল্প এবং ছোট উপন্যাস বা নভেলা। দুই ক্ষেত্রেই তাঁর গুরুত্বপূর্ণ রচনার সংখ্যা অনেক। জাতীয় ইতিহাস প্রণয়ন এবং জনগোষ্ঠীর অতীত পুনর্নির্মাণের মতো বড় প্রকল্প নিয়েও তিনি কাজ করেছেন বিভিন্ন মাধ্যমে। কিন্তু হুমায়ূন পাঠ ও বিবেচনার কোনো সুষ্ঠু ধারা বিকশিত হয়নি। তাঁর বই পড়ে যাঁরা অবসর যাপন করেন, তাঁরা তাঁর পাঠের ব্যাপারে আগ্রহী নন, আর যাঁরা অন্য সাহিত্যকর্ম পাঠের শ্রম স্বীকার করেন, তাঁরা হুমায়ূনে আগ্রহী নন—এ রকম এক চক্র এ কাজে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পটভূমিতে হুমায়ূন আহমেদ: পাঠপদ্ধতি ও তাৎপর্য গ্রন্েথ বাংলাদেশের ও বাংলা সাহিত্যের ‘মূলধারা’র পঠনপাঠনের ক্ষেত্রে তাঁর অবস্থান নির্দেশিত হয়েছে। দেখানো হয়েছে, জনপ্রিয় লেখক হিসাবে হুমায়ূন আহমেদ যেমন গুরুত্বের সঙ্গে পঠিত হতে পারেন, তেমনি ‘মূলধারা’র লেখক হিসাবেও তাঁর পঠনপাঠন তাৎপর্যপূর্ণ। হুমায়ূনের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ রচনার পাঠ-বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে চিহ্নিত হয়েছে তাঁর সাহিত্যিক ব্যক্তিত্ব ও কৃতিত্ব।