মানুষের কাহিনী দীর্ঘদিনের—লক্ষ লক্ষ বছরের। মানুষের কাহিনী এবং সভ্যতার ইতিহাস—একটির সাথে অন্যটি ওতপ্রােতভাবে সম্পর্কিত। মানুষের জাগতিক বিবর্তনের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে রূপান্তরিত ও বিকশিত হয়েছে সমাজ-সভ্যতা। গড়ে উঠেছে সুষ্ঠু জীবনযাপনের অনিবার্য উপাদান—সংস্কৃতি। আদিম যুগের মানুষের জীবনসংগ্রাম, প্রকতি ও পরিপার্শ্বের সাথে লড়াই, অনিরাপদ জীবনযাপন প্রাঞ্জল ভাষায় বিধৃত হয়েছে এ বইয়ে। বিভিন্ন আবিষ্কারেরও রয়েছে সরল বিশ্লেষণ। মূলত আগুন আবিষ্কারের মধ্য দিয়েই সূচনা ঘটেছে সভ্যতার উন্নতি ও বিকাশ। মুন্না ও মুন্নিসহ অন্য শিশুদের গল্প বলার মাধ্যমে বিধৃত হয়েছে মানুষের ইতিহাসের ঘটনা পরম্পরা। ইতিহাস বরাবরই সাধারণের আগ্রহজাগানিয়া বিষয়। মানুষ স্বভাবতই কৌতূহলপ্রবণ—জানতে চায় নিজের অতীত ইতিহাস, বুঝতে চায় সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ, অনাগত সময়চিত্র। খ্যাতনামা লেখক রাহুল সাংকৃত্যায়ন বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিতে মানবেতিহাসের পর্যায়ক্রমিক ধারা বর্ণনা করেছেন। ইতিহাসের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে, সাহিত্যনিষ্ঠ মন ও মননে শুনিয়েছেন চমকপ্রদ গল্প। যে গল্প একই সাথে মানুষ ও পৃথিবীর কথা জানান দেয়। ইতিহাস এবং সাহিত্য-বিপরীতধর্মী দুটি বিষয় একত্রে মিলিত হয়ে রচনা করেছে অনুপম এক উপাখ্যান। সাহিত্য এবং ইতিহাসের মিথস্ক্রিয়ায় মানুষের কাহিনী বইটি হয়ে উঠেছে বস্তুনিষ্ঠ প্রতিবেদন, কাল মহাকালের অখণ্ড দলিল।