শুরু বিতর্কের কেন্দ্র বাবরি মসজিদ যাঁর নাম সেই বাবরকে নিয়ে। মাত্র সাতচল্লিশ বছর বেঁচে ছিলেন মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বাবর। সাম্রাজ্যের মতোই তাঁর এক কীর্তি ‘আত্মকথা’। মধ্যযুগের সেই আশ্চর্য আত্মজীবনীতে যুদ্ধবিগ্রহের কথা বিশেষ নেই, তার বদলে রয়েছে নিজের এবং পরিবার পরিজনদের নিভৃত জীবনের অকপট উন্মোচন। পানাসক্তি থেকে শুরু করে কাব্যপ্রীতি, এমন কি যৌনজীবন কিছুই বাদ নেই। তারপর মধ্যযুগ থেকে সরাসরি একালের ভারতে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় স্বাধীনতার জন্য আজাদ হিন্দ ফৌজের ঐতিহাসিক লড়াই, তার ত্যাগ ও শৌর্যের কাহিনী কে না জানেন। লেখক শুনিয়েছেন সেদিনের নানা অজানা কাহিনী। তথ্য সংগ্রহের জন্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি। মধ্যপ্রদেশে প্রায় অজ্ঞাতবাস থেকে খুঁজে বের করেছেন সংগ্রামের অন্যতম প্রধান পুরুষ গুরুবক্স সিংহ ঢিল্লোঁকে, একদিন লালকেল্লার বিচার সভায় যিনি ছিলেন মৃত্যুদণ্ডের অপেক্ষায়। তারপর পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের পর সমগ্র দেশ যখন উত্তেজিত, বিশ্ব স্তম্ভিত, তখন আমরা দেখি তিনি পোখরানের গ্রামে গ্রামে সংগ্রহ করছেন ভয়াবহ সব তথ্য। বোমার পিছনে তাগিদ কী, তা জানতে তিনি কখনও স্বয়ং প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ঘরে, কখনও বিজ্ঞানীর সামনে, কখনও বা দুর্গম সিয়াচিন হিমবাহে, কখনও পাকিস্তানে। আর একটি রচনায় তাঁকে আবার দেখা যায় বর্মায়, আং সান কন্যা গণতন্ত্রের জন্য আপসহীন সংগ্রামী সু চি-র মুখোমুখি। বারবার সেখানে তিনি ভেসে বেড়ান উত্তাল জনসমুদ্রে। শেষ রচনা দুটি বলতে গেলে লেখকের আত্মকথা। কৈশোরে এক মামার বইয়ের আলমারি থেকে যে পাঠকের জন্ম, তাঁর বিশ্বসাহিত্য পরিক্রমা। অবশেষে লেখকের জবানবন্দি। ‘ভ্রমি বিস্ময়ে’ বাংলা ভাষায় সম্পূর্ণ নতুন ধরনের বই। এই সাংবাদিকতার অন্য মাত্রা, অনন্য তার গভীরতা।