শরৎচন্দ্র তাঁর শ্রীকান্ত উপন্যাসে শ্রীনাথ নামে এক বহুরূপীকে অমর করে রেখে গেছেন। কাহিনিপিপাসু বাঙালিমাত্রই শ্রীনাথের নামের, সঙ্গে পরিচিত। হয়তো দূর থেকে দেখে পরিচিত বহুরূপী বৃত্তিধারী কোনও মানুষের সঙ্গেও। বহুরূপী বলতে বোঝায়, একের বহুরূপ। বহুরূপ অর্থাৎ নানা রূপ বা আকৃতি। যে ব্যক্তি নানারূপ ছদ্মবেশ ধারণ করে নানা মূর্তিতে বা রূপে সেজে লোকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বা পথে-ঘাটে, উৎসব-অনুষ্ঠান-মেলায় মানুষের মনোরঞ্জন করেন, তিনিই বহুরূপী। বহুরূপী ভারতীয় লোকসংস্কৃতির একটি বিশেষ ঐতিহ্যপূর্ণ লোককলা। বহুরূপীরা লোকশিল্পী। এই শিল্পটি এখন লুপ্তপ্রায়। যদিও বহুরূপীরা ভিক্ষাবৃত্তি অবলম্বন করে চরম দুঃখ-দুর্দশার মধ্যেও এই শিল্পটিকে বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। লেখিকা এই বিচিত্র বিষয়টির ওপর নানাভাবে আলো ফেলে গ্রন্থবদ্ধ করেছেন। ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বহুরূপী শিল্পী সুবল দাসবৈরাগ্য এই সংস্কৃতির শ্রেষ্ঠ ধারক, বাহক ও চিন্তাবিদ। তাঁর অভিজ্ঞতা এবং জীবনবৃত্তান্তকে গ্রহণ করে লেখিকা এই অবলুপ্তপ্রায় লোকসংস্কৃতির গভীরে নেমে, বহুরূপীদের শিল্পব্রতের বিস্তৃত সন্ধান দিয়েছেন এই গ্রন্থে।