মানুষের পিছনের জীবনটা কি ব্ল্যাকবোর্ডের ওপরে চকখড়ির লেখাজোকা, যেটা মুছে ফেললেই নতুন লেখা হয়ে উঠবে সহজ? কতটাই-বা মুছে ফেলা যায়? এক বিবাহবিচ্ছিন্ন দম্পতি ও তাঁদের সন্তানকে নিয়ে লেখা এই উপন্যাসে নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছেন রমাপদ চৌধুরী। মা—এই ছোট্ট শব্দটি নিয়ে দেশে-দেশে কতনা উচ্ছ্বাস, কত কাব্য, কত গান, কত শ্লোক। অথচ বাস্তব জীবনে তার মূল্য কতটুকু? একটি শিশুকে স্কুলে ভর্তি করাতে যাও, মায়ের কোনও স্বীকৃতি নেই, বাবার নাম চাই। বাবা জীবিত? তাহলে তাঁরই সই চাই, তাঁকেই আসতে হবে। যদি বলা যায়, না, বাবা থেকেও নেই, মা আলাদা থাকেন, মা একাই কষ্ট করে মানুষ করছেন সন্তানকে, তাহলে? তাহলেও কি রেহাই পাওয়া যাবে? জুটবে সন্দেহ আর অমর্যাদা, এমন-কি, আড়ালে উপহাসও। বাবা নেই, আর বাবা থেকেও নেই—এই দুইয়ের মধ্যে যেটুকু ফাঁক, সেখানে কতখানি আলো আর কতটা অন্ধকার—সেটাই চিরে-চিরে দেখিয়েছেন রমাপদ চৌধুরী, যাঁর প্রতিটি উপন্যাসই ‘পাওয়া’—কোনও-না-কোনও দিক থেকে।