ভারতীয় গণনাট্য সংঘের প্রযোজনায় ‘জবানবন্দী’ (১৯৪৩) ও ‘নবান্ন’ (১৯৪৪) নাটকে নাট্যকার শ্রীবিজন ভট্টাচার্য মঞ্চে তুলে আনলেন রক্তমাংস-সহ সমকালীন বাস্তব জীবন, যেখানে সাধারণ মানুষ নিজের ভাষাতেই কথা বলছে, কাঁদছে, আর্ত চিৎকার করছে। নাট্যজগতে এক বিপ্লব ঘটে গেল। শুরু হল নবনাট্যের জয়যাত্রা। এই নাট্য-আন্দোলনে যাঁরা তাঁদের জীবনের সর্বস্ব ত্যাগ করেছিলেন, গঙ্গাপদ বসু তাঁদেরই একজন। বিশিষ্ট নট ও নাট্যকার গঙ্গাপদ বসু এক অসামান্য প্রতিভা। নাটকের নবযুগ প্রতিষ্ঠার সময়ে তিনি ছিলেন মহর্ষি মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, শ্রীবিজন ভট্টাচার্য, শ্রীশম্ভু মিত্র, শ্ৰীমতী তৃপ্তি মিত্র, শ্রীমতী শোভা সেন, শ্রীতুলসী লাহিড়ীর সহযোদ্ধা। তাঁর রচিত একাধিক নাটক সেকালে জনপ্রিয় হয়েছিল। এ ছাড়া সুদীর্ঘ নাট্যজীবনের অভিজ্ঞতায় তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা করেছেন বিভিন্ন বিষয়ে, সেসব সংগ্রহ করে তাঁর মৃত্যুর পরে প্রকাশিত হয়েছিল প্রবন্ধ-সংকলন ‘নাটক ও নাট্য-আন্দোলন’। গঙ্গাপদ বসুর জন্মশতবর্ষে আনন্দ থেকে প্রকাশিত হল ‘নাটক ও নাট্যকথা’। এই সংকলনে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ‘নাটক ও নাট্য-আন্দোলন’-এর দুর্লভ প্রবন্ধগুচ্ছ এবং বারোটি নাটক। গঙ্গাপদ বসুর এই বইটি একাধারে নাট্য-সাহিত্য ও নাট্য-ইতিহাসের দলিল হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ।