অমাবস্যার ফুল’ আঁধার হাতড়ে আলো খোঁজার উপন্যাস। বর্ষণের সৌন্দর্যপিপাসু স্ব-বিরহী মন গাঁয়ে এসে খুঁজে পায় কুমকুম-নামক এক নারীকে। দৃষ্টিহীন কুমকুমের জগৎ এতকাল আঁধারেই জলের মতন ঘুরপাক খেয়েছে। জন্মান্ধ কুমকুম এক আলোকহীন প্রাণ, যে প্রাণকে বর্ষণ তার অতিমানবীয় ভালোবাসায় আলোকাভিমুখী করে তুলেছে। এ উপন্যাসে বর্ষণ-কুমকুম; রবীন্দ্র-কাদম্বরীর মানসপ্রভাবজাত দুই নরনারী। অন্যদিকে হিয়ার সাথে শ্রাবণের এক বৃষ্টিভেজা দিনে বর্ষণের আকস্মিক পরিচয় ঘটে। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে বর্ষণের মানসিক সান্নিধ্যপ্রত্যাশী হিয়ার বুকে বর্ষণকে ঘিরে যে নিভৃত প্রেম সঞ্চারিত হয়েছে তা এ উপন্যাসের ঘটনাবৃত্তকে মনোস্পর্শী করে তুলেছে। কিন্তু বর্ষণের মনোভূমি বেষ্টন করে রয়েছে কুমকুমের স্নিগ্ধ ভালোবাসা। অন্ধত্বের চিরায়ত সামাজিক সংস্কার বহনকারী কুমকুমের অকর্ষিত ভূমিতে বর্ষণ ফুটিয়েছে অমাবস্যার ফুল। যেভাবে রবীন্দ্রনাথ কাদম্বরী দেবীর জীবনকে মুকুলিত করে তুলেছিলেন তাঁর অসীম প্রেম ও ভালোবাসার পাদপদ্মে। রবীন্দ্রনাথের সর্ববিস্তারী প্রেম কাদম্বরীকে শেষরক্ষা করতে পারেনি। বর্ষণের অনুভবজাত প্রেম কি পেরেছিল কুমকুমের ভালোবাসাকে শেষরক্ষা করতে? তারই উত্তর খোঁজা হয়েছে এ উপন্যাসের পরতে পরতে।