তার জন্মপত্রিকায় গ্ৰহসংস্থান নিয়ে মাথা ঘামায়নি কেউ। না জন্মলগ্নে, না পরবর্তীকালে। কেই বা ঘামাবে? আঁতুড়ঘরেই সে হারিয়েছে তার মাকে। বাবা ছিলেন উপার্জনহীন, উদাসীন, ক্ষ্যাপাটে। স্বামী পরিত্যক্তা পিসির ছিল ফিটের ব্যামো। তবু সেই পিসিই তাকে দিয়েছিল কোল। একটি কোল যদি বা জুটল, বছর ঘুরতে না ঘুরতেই হারালো আরেক কোল। দ্বিতীয় সেই কোল তার জন্মভূমি। সে জন্মেছিল পুববঙ্গে। ঢাকা জেলার বিক্রমপুরের এক বিখ্যাত পরিবারে। দেশ ভাগ তাদের অস্তিত্বের শিকড় ধরে দিল টান। ঠাকুর্দা নিরুদ্দেশ, বড় জ্যাঠা বিলেতে। কুচক্রী সেজ জ্যাঠা হাতিয়ে নিল তাদের যাবতীয় বিষয়আশয়। তারপর? এক সম্পন্ন পরিবারের ভাগ্যহারা একটি ছেলের জীবনকাহিনির সূত্রে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় একদিকে তুলে ধরেছেন অদ্ভুত ঘাতপ্রতিঘাতময় এক পারিবারিক কাহিনি, অন্যদিকে সূক্ষ্মভাবে মিশিয়ে দিয়েছেন অভিশপ্ত দেশভাগের বেদনা। এ শুধু বিশেষ একটি পরিবারের উপাখ্যানই নয়, ছিন্নমূল বহু মানুষের কাহিনি এবং একইসঙ্গে এক বিশেষ সময়ের নিখুঁত প্রতিচিত্রণ।