বিশ্বসাহিত্যে গােয়েন্দাগল্পের প্রথম স্রষ্টা কে বলা কঠিন। ১৮৮৭ সালে আবির্ভূত হলেন সখের গােয়েন্দা (অ্যামেচার ডিটেকটিভ) হিসেবে। এমন সজাগ মন অভিজ্ঞ পারদর্শী গােয়েন্দার জন্য তৃষ্ণার্ত পাঠক যে এতদিন ধরে অপেক্ষা করছিলেন। দুর্ভেদ্য কিংবা দুঃসাহসিক— যে-কোন রহস্যের উদঘাটনে তিনি অদ্বীতীয়। আক্ষরিক অর্থেই সর্বজ্ঞ এই গােয়েন্দা তার নানা রহস্যরােমাঞ্চ কাহিনীগুলি নিজে বলেননি। এমনকি লেখকও তিনি সরাসরি নন। এ কাহিনীগুলির কথক তার গুণগ্রাহী ডাঃ ওয়াটসন। এই মানুষটির বর্ণাঢ্য ভূমিকা, প্রতিটি গল্প ও কাহিনী তার কল্পনা ও উপস্থাপনায় আরও সমৃদ্ধি লাভ করেছে।
তাঁর কাহিনীগুলির কেন্দ্রে আছে নিখুঁতভাবে সংঘটিত একটি অপরাধ। এই অপরাধ ও তার অপরাধীকে আবিষ্কার করার জন্য কয়েকটি অস্পষ্ট ও অসংলগ্ন সন্ধানসূত্রকে কাজে লাগিয়ে তিনি যেভাবে রহস্য উন্মােচন করেছেন, তার জুড়ি মেলা ভার। অপরাধীর সন্ধানে নানা বৈজ্ঞানিক বিদ্যাকে প্রয়ােগ করে তাকে প্রায় এক ধরনের যুক্তিগ্রাহ্য বিজ্ঞানের পর্যায়ে উত্তীর্ণ করেছেন এই গােয়েন্দাপ্রবর। অন্যান্য রহস্যসন্ধানীর চেয়ে অনেক বেশি জনপ্রিয় হােমসের প্রতিটি অভিযান আজও পাঠককে সমানভাবে আকৃষ্ট করে। রহস্য গল্পের বিষয়বস্তু সম্পর্কে আগেভাগেই কোনও কিছু-জানাই দস্তুর। জানিয়ে দিলে রহস্য ও কৌতহল—দুই নষ্ট হয়ে যায়।