‘বরং সেইসব বিষয় নিয়ে রসালাপ করা যেতে পারে, যারা সঙ্গী হলেও সংগীতে নেই। লেখক হিসেবে এটা নতুন এলাকা আমার কাছে...’ এভাবেই এই বই লিখতে শুরু করেছেন রূপম। দার্শনিক দৃষ্টি আর রসবোধের স্বতঃস্ফূর্ততায় দৈনন্দিন জীবনকেই বাঁধতে বাঁধতে এগিয়েছেন, একটা ঘটনাই যেন আর একটা দৃশ্যের পূর্বকথন হয়ে উঠেছে। কোথাও গদ্যে লিখেছেন: ‘গুরু শিষ্যে "আমাদের নয়" "আমাদের নয়”-এ মধুর কাটাকুটি। হাতে রইল গোটা পৃথিবী।’ কোথাও পদ্যে: 'আকাশপোতের দৈনিক পিকনিক/বিলি হয়ে যায় নীলগ্রহের খবর’ কিংবা ‘গাছেরা মানুষ চেনে/বোঝে কে কেমন লোক/ টিপটিপ বৃষ্টিতে/ঝরে মঙ্গল শ্লোক’… এ ভাষা, এ কথনভঙ্গিমা, এ চিত্ররূপ... এসবই তো কবি রূপমের নিজস্বতা। পটভূমিকাটুকুই যা আলাদা। তবে সংগীতকে কি সম্পূর্ণ দূরে সরিয়ে লেখা (পড়ুন বাঁচা) সম্ভব রূপমের? বোধহয় নয়। তাই স্বাভাবিক নিয়মেই গানের বিষয় হয়েছে রক কনসার্টে কিছু দর্শকের মার খাওয়ার ঘটনা বা জন লেননের অপঘাত মৃত্যুর ইতিহাস। গদ্য লেখাতেও রূপম ছুঁয়ে গেছেন তাঁর প্রথম জীবনের লড়াইয়ের দিনগুলো অথবা ‘হেল্টার স্কেল্টার’ খ্যাত চার্লস ম্যানসনকে। সংগীত প্রসঙ্গের এমন উত্থাপন এই বইয়ের ক্ষেত্রে অ্যাক্সিডেন্টাল হলেও তা কোমল করে ছুঁয়ে দিয়ে গেছে চেনা পরিসর। লেখকের নাম রূপম বলেই বোধহয়, বেসুরে বাজেনি। ‘বিশ্বরূপম’ হল কিছুটা গদ্যে এবং বেশিটা পদ্যে লেখা দিনলিপি। রম্য গদ্য এবং নতুন গানে ভরপুর। রূপমের রকজার্নাল সিরিজের সমান্তরালে দাঁড়িয়ে এই বই এক অন্য আলোর সন্ধান করে। যে আলো নিশ্চিত করেই স্টেজের আলো নয়।