শিল্পী মুর্তজা বশীর এই ভিন্নধর্মী গ্রন্থ সম্পর্কে বলেন : ... ভৌগোলিক পরিবেশ ও ঐতিহাসিক পটভূমি সংস্কৃতির বিবর্তন ঘটায়। এই উপমহাদেশের প্রবহমান সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হলেও লোকজ ও বিদেশী সংস্কৃতির সংমিশ্রণে বাংলার শিল্পকলায় যে রূপান্তর লক্ষ্য করা যায় তাই ছিল আমার অšে¦ষণ। সেই উৎস অšে¦ষায় এই উপমহাদেশের প্রাচীন শিল্পকলা ছাড়াও সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ইতিহাস পাঠ যেমন একদিকে অতি আবশ্যকীয় ছিল, তেমনি বেদ্ উপনিষদ, পুরাণ, জাতক এবং হিন্দু-বৌদ্ধ স্মৃতি ও শ্রুতিশাস্ত্র প্রভৃতির সাথে পরিচিত হতে হয়েছে। এই অনুসন্ধানের এক পর্বে বাংলা স্বাধীন সুলতানদের স্থাপত্য, মুদ্রা ও শিলালিপির প্রতি মনঃসংযোগ ঘটে। প্রসঙ্গক্রমে আবিসিনিয়া থেকে আগত হাবশীদের স্বল্পকালীন রাজত্বকাল সম্পর্কে ঔৎসুক্য জাগে। কিন্তু প্রচলিত ইতিহাস গ্রন্থগুলির যৎকিঞ্চিৎ আলোকপাত আমার অন্তর্নিহিত জিজ্ঞাসাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পরিতুষ্ট করতে পারেনি। এগুলো ছিল সুলতানদের উত্থান-পতনের ইতিবৃত্ত, রোমাঞ্চিত ইতিকথা। ইতিহাস আমার কাছে রাজ-রাজড়াদের ধারাবাহিক বর্ণনা নয়, সংঘটিত ঘটনার ব্যাখ্যা। তাই সুলতানী আমলের ইতিহাস হলো বহিরাগত, দরবার রাজনীতি ও ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, শ্রেণীগত ও বর্ণবিদ্বেষ এবং পারসিক তুর্ক-আফগান আরব অভিজাতদের স্বার্থসংঘাত।