সত্তরের কবিক্রমে জাফরুল আহসানের ঔজ্জ্বল্য একাধিক কারণে। তিনি মূলত কবি হলেও সত্তরের যে কজন স্বল্পসংখ্যক কবি গদ্য রচনায় কৃতিত্ব দেখিয়েছেন তিনি তাঁদের একজন।
শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিবিষয়ক ত্রৈমাসিক পত্রিকা কাদাখোঁচার সম্পাদক জাফরুল আহসানের লেখালেখির সময়কাল তিন যুগেরও অধিক। ইতোমধ্যে কাব্যসমগ্রসহ ১৪টি কবিতার বই বেরিয়েছে। গল্পসমগ্র ভাঙ্গন এবং প্রবন্ধের বই কবিতার নানা অনুষঙ্গ ছাড়াও তিনি সম্পাদনা করেছেন মুক্তিযুদ্ধের কবিতা।
মুক্তিযুদ্ধ বহু ত্যাগ ও তিতিক্ষার ইতিহাস। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমেই আমরা অর্জন করেছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন মানুষের পক্ষে কলমের কালিতে ‘স্বাধীনতা’ শব্দটি লেখা যত সহজ, বাস্তবে তার রূপ দেয়া ততটাই কঠিন। স্বাধীনতার সূর্যের রঙটি কেমন তা দেখাতে গিয়ে তিরিশ লাখ লোক রক্ত ঝরিয়েছেন। ইতিহাস তাঁদের শহিদের মর্যাদা দিয়েছে। আর যাঁরা বেঁচে আছেন তাঁরা বাঙালি জাতির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা।
কবি জাফরুল আহসান স্বাধীনতার নেপথ্যের ইতিহাস মুক্তিযুদ্ধকালের গৌরবোজ্জ্বল বীরত্বগাথা কিশোর উপযোগী করে বর্ণনা করেছেন বাংলাদেশ পেলাম কেমন করে বইটিতে। স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জেনে যদি তাদের পূর্বপুরুষের ঋণ হৃদয়ে ধারণ করে নিজেরাও উজ্জীবিত হতে পারেন, গ্রন্থরচনার মূল উদ্দেশ্যটি তবেই সার্থক হবে।
বইটি পাঠকপ্রিয়তা অর্জনে সক্ষম হবে আশা করি।
ফজলুল কাশেম
কবি ও কথাসাহিত্যিক