নজরুল ইসলাম আমাদের জাতীয় কবি। কিন্তু তিনি শুধু কবি নন, সাহিত্যের প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাঁর প্রতিভার স্বাক্ষর রয়েছে। কী প্রবন্ধ, কী গল্প, কী নাটক, কী গান সর্বত্রই তিনি বিচরণ করেছেন অত্যন্ত সাবলীলভাবে।
স্বদেশের প্রতি, স্বজাতির প্রতি তাঁর ভালোবাসা ছিল অপরিসীম। মানুষে মানুষে ভেদাভেদÑ ধর্মে ধর্মে হানাহানিতে ছিল তাঁর তীব্র আপত্তি। বিশ্বমানবের বেদনাকে তিনি হৃদয়ে লালন করেছেন। মোদ্দাকথা, তিনি ছিলেন একাধারে সাম্যবাদী, উদার ও দেশপ্রেমিক। নারীর প্রতি ছিল তাঁর গভীর শ্রদ্ধাÑ চেয়েছেন নারীকে মানুষ হিসেবে সত্যিকার মর্যাদা দিতে। প্রেম ও প্রকৃতি দুটোতেই তিনি ছিলেন একশো ভাগ রোমান্টিক; বিশুদ্ধ রোমান্টিক। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন সৃষ্টির জন্য ভাঙন যেমন দরকার তেমনি গড়ার জন্য প্রয়োজন প্রেম-প্রীতি-ভালোবাসা।
উল্লেখ্য পেশাগতভাবে সরকারি কলেজের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় ও বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর এবং অধ্যক্ষ ড. দিল আফরোজ বেগমের কাজী নজরুলের গদ্যসাহিত্য নিয়ে পিএইচডি অভিসন্দর্ভ থাকলেও নজরুলকে নিয়ে তাঁর ভাবনার পরিধি দিন দিন বিস্তৃত হচ্ছে। তিনি দীর্ঘসময় দুরারোগ্য কর্কটরোগে আক্রান্ত হয়ে শারীরিক ও মানসিক বিপর্যয়ের কারণে অনেকটা স্তিমিত হয়ে পড়েছেন। তবুও ছড়িয়েছিটিয়ে থাকা তাঁর প্রবন্ধগুলোÑ ‘চিরকালীন নজরুল’ পাঠকের কাছে দেরিতে হলেও পৌঁছাল। পাঠকের আনন্দেই সার্থকতা।