ভ্রমণকাহিনীই বটে এটা, আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ লিখেছেন তার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণেরই কাহিনী, কিন্তু ভ্রমণকাহিনী হিসেবে আখ্যায়িত করলে খুবই কম বলা হবে। উপন্যাসের মতাে এর আছে একটা আখ্যানভাগ, আর আছে চরিত্র, সেই চরিত্রগুলাের কোনােটা আমাদের চেনা, যেমন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, কেউ কেউ অচেনা, কিন্তু লেখকের বর্ণনাগুণে তারা হয়ে উঠেছেন জীবন্ত। কবিতার মতাে বর্ণনা আছে এখানে, অপরূপ নিসর্গ, সে নায়াগ্রার মতাে জলপ্রপাত কিংবা মানহাটানের ছােট্ট পার্কটিরই হােক, নিখুঁত শিল্পীর ছবির মতাে চোখের সামনে ফুটে ওঠে সেইসব দৃশ্যাবলি, হাস্যরসে উজ্জ্বল সব ঘটনা আর চরিত্রের বিবরণ আছে এতে, আছে সমাজবিজ্ঞানীর মতাে বিদেশী কিংবা প্রবাসী সমাজ-সভ্যতা ও মানবিক সম্পর্কগুলাের চমৎকার বিশ্লেষণ। আর এ গন্তব্য শুধু যুক্তরাষ্ট্রও নয় আরও বিভিন্ন দেশ দেখার সঙ্গে এই দেশ দেখাটাকে তিনি মিলিয়ে নিয়েছেন, যেমন সাহিত্য দর্শন শিল্প ইতিহাসের বিভিন্ন বিচিত্র অধ্যায়ও পরিব্রাজন। করা হয়ে ওঠে এই গ্রন্থটি পাঠের মাধ্যমে। এ এক অপূর্ব গ্রন্থ বাংলা সহিত্যে ভ্রমণ কাহিনীর ঐতিহ্য খুবই ঋদ্ধ। রবীন্দ্রনাথ, সৈয়দ মুজতবা আলী, শরৎচন্দ্র, পালামৌয়ের সঞ্জীবচন্দ্র, দৃষ্টিপাতের যাযাবরের কথা মনে রেখেও বলা যায়, এই গ্রন্থ বাংলা ভ্রমণসাহিত্যকে আরও ঐশ্বর্যময় করে তুলবে