দাড়ি ইসলামী শরীয়তের অন্যতম বিধান। দাড়ি কমপক্ষে এক মুষ্ঠি পরিমাণ লম্বা রাখা প্রতিটি মুসিলম পুরুষের জন্য ওয়াজিব। আমাদের দেশে লোকমুখে প্রচলিত আছে, দাড়ি রাখা সুন্নত। কিন্তু আসলে তা নয়, শরীয়তের দৃষ্টিতে দাড়ি রাখা ওয়াজিব। সকল ইমামই এ ব্যাপারে একমত। এতে কোন মতভেদ নেই। তবে অনেকে যে বলে থাকেন, দাড়ি রাখা সুন্নত; এই সুন্নত শব্দের অর্থ হল রাসূল সা.-এর আদর্শ। রাসূলের আদর্শ ফরজ পর্যায়েও আছে, ওয়াজিব পর্যায়েও আছে, আবার মুস্তাহাব পর্যায়েও আছে। এখন দাড়ি রাখা সুন্নত এই অর্থে যে, এটা রাসূল সা. এর আদর্শ; কিন্তু এটা ওয়াজিব পর্যায়ের বিষয়।
দাড়ি মুসলমানদের বিশেষ একটি বৈশিষ্ট্য। এর মাধ্যমে মুসলমানদের অন্যদের থেকে অতি সহজেই আলাদা করা যায়। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, মুসলমানদের অনেকেই ইউরোপ-আমেরিকানদের আদর্শিক গোলাম হয়ে ইসলামের বিশেষ শে’আর দাড়ির প্রতি শৈথীল্য প্রদর্শন করে থাকে। নিজেরা তো দাড়ি রাখেই না, অধিকন্তু দাড়িওয়ালাদের দেখলে তাদের অন্তর্জালা শুরু হয়ে যায় এবং বিভিন্ন ধরনের কটূক্তি ও ঠাট্টা-বিদ্রুপ শুরু করে। এতে যে তাদের ঈমানহারা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, সেদিকে তাদের কোন ভ্রুক্ষেপই থাকে না। আবার কোন কোন দরবারীরা তো বলে, দাড়ি রাখার কোন প্রয়োজনই নেই। এসবই ভ্রান্ত।
দাড়ি সম্পর্কে বিভিন্ন রেসালা বাজারে পাওয়া যায়। কিন্তু হয়রত মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী দা. বা. কর্তৃক লিখিত ‘ডাড়হী আওর ইসলাম’ পুস্তকখানি অধ্যয়ন করার পর একে অন্যান্য পুস্তক থেকে একটু আলাদাই বলা চলে। এ কিতাবটিতে তিনি দাড়ি সম্পর্কিত সকল বিষয় বিস্তারিত দলিলসহকারে বর্ণনা করেছেন এবং দাড়ি সর্ম্পকিত সংশয়গুলো নিরসন করেছেন। কুরআন, হাদীস ও চার মাযহাবের ইমামদের দৃষ্টিতে দাড়ি প্রমাণিত করার পর মেডিকেল সাইন্সের দৃষ্টিতে দাড়ি রাখার উপকারিতা, না রাখার অপকারিতাও বর্ণনা করেছেন খুব সুন্দরভাবে। তারপর তিনি নখ, মোচ, চুল ও শরীরের বিভিন্ন স্থানের লোম সম্পর্কে বিবিধ মাসায়েল উল্লেখ করে কিতাবটির গ্রহণযোগ্যতাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন।