ভারত থেকে সাত সমুদ্র পারে সুদূর অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরে বাবা আর মায়ের সঙ্গে এসে বাসা বেঁধেছিল ছোট্ট সুনয়না। সেখানেই অতি শৈশবে সে বাবাকে হারাল। নতুন পথ চলা আরম্ভ হল তার অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান মা বন্দনা আর সৎ বাবা জেরেমির সঙ্গে। কয়েক বছর পর বঞ্চিত, লাঞ্ছিত এবং নির্যাতিত সাত বছরের মেয়েটির জীবনে যেন নতুন করে বাঁচার পাথেয় হয়ে চলে এল সৎ ভাই সুজয়। আস্তে আস্তে সুজয়ের মায়ের জায়গাটাই দখল করে নিল সে। সিডনি শহরের পটভূমিকায় রচিত এই কাহিনির সূত্রপাত বারো বছরের সুনয়না এবং পাঁচ বছরের সুজয়ের বাড়ি থেকে পালিয়ে রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে গিয়ে আশ্রয় নেওয়ার ঘটনা থেকে। নানা ঘটনা, বিভিন্ন চরিত্রের অন্তর্নিহিত সংঘাত, বাস্তবানুগ সংলাপ এবং অনায়াস, প্রাঞ্জল বর্ণনার মাধ্যমে এই উপন্যাস তুলে ধরে এক বিদেশি সমাজের ছবি। পাঠকের চোখে ফুটে ওঠে পশ্চিমি মূল্যবোধের ভিত্তিতে গঠিত নর-নারীর পারস্পরিক সম্পর্কের নানা জটিলতা। তাঁরা উপলব্ধি করেন যে অসহায়, আশ্রয়হীন ছেলেমেয়েদের নিরাপত্তার ব্যাপারে কতখানি সংবেদনশীল সেই দেশের সরকার এবং সমাজসেবায় তৎপর কর্মচারীরা। যাঁরা এগিয়ে গিয়ে অতি দক্ষতার সঙ্গে সাহায্য করেন, নিশ্চিন্ত একটুকু আশ্রয়-সন্ধানরত বেপরোয়া ছেলেমেয়েদের। ফস্টর কেয়ার প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে একান্ত নির্দ্বিধায়, মূল্য দেয় প্রতিটি মানুষের জীবনকে।